,

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

মোঃ আবুল বাসার,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে হত্যার পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক প্রবাসী স্বামীর বিরুদ্ধে। ফাঁসি নয়, শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফাঁসির নাটক সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করছে পরিবার।
নিহত গৃহবধূ নাসরিন আক্তার বৃষ্টি (২৭) বেগমগঞ্জের ১৬নং কাদিরপুর ইউনিয়নের গয়েসপুর গ্রামের শাহীন ভিলার নুরুজ আলীর মেয়ে।
অভিযুক্ত স্বামী মোঃ আব্দুল হালিম সুমন মোল্লা (৩৫) বেগমগঞ্জের ১৪নং হাজিপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের মোল্লাবাড়ির নুরুজ্জামান মোল্লার ছেলে। পেশাগত জীবনের সে একজন কাতার প্রবাসী।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লাশের ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পিত্রালয়ের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে বৃষ্টিকে তার শ্বশুরবাড়িতে শয়ন কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ।পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সকালে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রায় সাত বছর আগে সুমন মোল্লার সাথে বৃষ্টির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানান বাহানায় সুমন মোল্লা বৃষ্টির বাপের বাড়িতে যৌতুকের টাকা দাবি করে। দাবি অনুযায়ী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অদ্যাবধি পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা সুমন মোল্লাকে দেয় বৃষ্টির পরিবার। এরপরেও নানা রকম কলহ বিবাদ লেগে থাকে বৃষ্টির পরিবারে। কলহ বিবাদ লেগে থাকার কারণ হিসেবে সুমন মোল্লার অনৈতিক পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানায় সুমন মোল্লা একাধিক নারীর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করেন, যে কারণে নিজের বিবাহিত স্ত্রীর প্রতি উদাসীন থেকেও যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিক টর্চার করছেন প্রতিনিয়ত। তারই ধারাবাহিকতায় সুমন মোল্লা ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে বৃষ্টিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাকে গামছা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখে।
নিহতের মামাতো ভাই ফখরুল ইসলাম কিরণ বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি বৃষ্টি সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে থাকলেও তার পা খাটের উপরে লাগানো রয়েছে এবং গলায় পেঁচানো গামছা তার থুতুনিতে কোনরকম আটকে আছে। যাতে কোনভাবেই প্রমাণ হয় না যে বৃষ্টি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বরং এটাই স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফাঁসির নাটক সাজানো হয়েছে। এমনকি যে কক্ষে তাকে ফাঁস লাগানো হয়েছে সেই কক্ষের দরজা ভেতরে আটকানো ছিল না, তা বাহিরের দিক থেকে আটকানো ছিল। আর তারা যদি আমার বোনকে হত্যা না করে তবে তারা পরিবারের সকল সদস্যরা কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা তো এখনো কোন মামলা করিনি। মৃত্যুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা একবারের জন্যেও আমার বোনের খবর নেয়নি তারা সবাই পলাতক রয়েছে। আমার বোনের হত্যার জন্য আমি তাদের উপযুক্ত বিচার ফাঁসির দাবী করছি।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লিটন দেওয়ান জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *